ইবোলা ভাইরাস সম্পর্কে স্বাস্থ্য সচেতনতা ( জেনে রাখুন )

ভয় নেই লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করলে ইবোলা ভাইরাস থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব!
ইবোলা কী?
ইবোলা ভাইরাস আগে রক্তপ্রদাহজনিত জ্বর [Ebola hemorrhagic fever (EHF)] হিসেবেই সমধিক পরিচিত ছিল। ইবোলা মূলত একটি আরএনএ ভাইরাস। যেটির নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গোর ইবোলা নদীর নাম থেকে। ইবোলা ভাইরাস গোত্রের ৫টির মধ্যে ৩টি প্রজাতি মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়ে গুরুতর অসুস্থ করার ক্ষমতা রাখে! বাকি ২টি মানুষের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে জাইরে (Zaire) ইবোলা ভাইরাস (জাইরে হলো একটি জায়গার নাম যেখানে সর্বপ্রথম এই ভাইরাসে কোনো মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলো)। প্রথমবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ছিল শতকরা ৯০ শতাংশ! ভয়াবহ এই ভাইরাসটি মানবদেহে রক্তপাত ঘটায়। লিভার, কিডনিকে অকেজো করে দেয়, রক্তচাপ কমিয়ে দেয়, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কমিয়ে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত করে।
ইবোলা ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশের পর কয়েকদিন থেকে প্রায় ৩ সপ্তাহ কোনো লক্ষণ প্রকাশ না করেই অবস্থান করতে পারে। অর্থাৎ এর লক্ষণসমূহ পরিলক্ষিত হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ২১দিন লাগতে পারে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি এই রোগ নিয়ে চলে যেতে পারেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে। আর সেখানে ছড়িয়ে দিতে পারেন নিজের অজান্তেই।
ইবোলার লক্ষণঃ
ইবোলা আক্রান্ত ব্যক্তি প্রথমে নিরীহ ফ্লু’র মতো হালকা জ্বর, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা অনুভব করে। কিছুদিন পর তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা, ত্বকে দানা দানা উঠা, মুখে ঘা, ডায়রিয়া এবং মারাত্মক বমি শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে শরীরের ভিতরে বাইরে রক্তপাত শুরু হতে পারে। এই ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির লিভার, কিডনি, হৃদপিন্ড অকেজো করে দেয়, যার ফলে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ ফ্লু’র মতোই। সর্দি কাশি, মাথা ব্যথা, বমি, ডায়েরিয়া এবং জ্বর এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ। তাই কারো উপরোক্ত কোনো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে! রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে যে এটা ম্যালেরিয়া, হ্যাপাটাইটিস, কলেরা বা অন্য কোনো রোগের জীবাণুর কারণে হচ্ছে কিনা!
কিভাবে ছড়ায়?
বলা হয়ে থাকে বাদুরের খাওয়া ফল থেকেই ইবোলা ভাইরাস মানুষের দেহে প্রথম প্রবেশ করে এবং পরবর্তীতে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করে। ইবোলা আক্রান্ত মানুষের দেহরস অপর কোনো মানুষের দেহের স্পর্শে আসলে সেই ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর পরও ভাইরাসটি বেশ কয়েকদিন টিকে থাকে।
আশার কথা হলো, রোগটি ফ্লু ও অন্যান্য বায়ুবাহিত রোগের মতো ছড়ায় না, আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে না আসলে এই রোগে সংক্রমিত হবার ভয় নেই।
লক্ষণ অনুযায়ী রোগীর শাররীক ও মানসিক লক্ষণ বিবেচনা করে ঔষধ নির্বাচন করলে হোমিওপ্যাথিতে এই ভাইরাস নিরাময় সম্ভব।
নিম্নে লক্ষণ ভিত্তিক কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধের নাম উল্লেখ করা হলোঃ
Crotalus horridus 30C - আক্ষেপ এবং গলা সংকোচ, গাঢ় বেগুনি রক্ত, বেগুনি রঙের সঙ্গে শোথ, চামড়া মোটা ইত্যাদি কারণে গিলতে অসুবিধার জন্য বিবেচনা করা হবে.
Bothrops 30C - স্নায়বিক কম্পন, বক্তৃতা বা সাজানো কথায় অসুবিধা, ঢিলা, ফোলা মুখ, কালো বমি উপস্থিত থাকলে এটি বিবেচনায় আনতে হবে।
Lachesis mutus 30C, - কম্পন এবং বিভ্রান্তি, দেহের কোন অংশে রক্তক্ষরণের সঙ্গে প্রলাপ, এই ওষুধ বিবেচনা আনে। প্রায়শই, ব্যক্তি টাইট বা আঁটসাঁট পোশাক বা ব্যান্ডেজ বহনে এবং বাম দিকে কষ্ট পায়, তাপে উপশম মনে করে।
Mercurius corrosivus 30C, - প্রচুর রক্তপাত, হাঁটু মোড়ে শুয়ে থাকলে ভালো অনুভব করে, প্রলাপ, মাথা ব্যথার সাথে গালে জ্বালা, আলোকাতঙ্ক রোগ, কালো ফোলা ঠোঁট, ধাতব, মুখের মধ্যে তিক্ত বা লবণ স্বাদ ।
Secale cornutum 30c - অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে আপত্তিকর গন্ধ, ঠান্ডা ত্বক এবং রণন সঙ্গে পাতলা, ধীর, যন্ত্রণাহীন ক্ষরণ গাঢ় রক্তক্ষরণ জন্য. ব্যক্তিগতভাবে উন্মোচিত হতে চায় এবং গতি থেকে খারাপ অনুভূতি।
Echinacea 30C - বিষক্রিয়া বা রক্তদূষণ, পূতিগন্ধময় নিঃসরণ এবং লিম্ফ নোড বৃদ্ধিতে এটি বিবেচ্য ।
স্বাস্থ্য সচেতনতা বিষয়ক আরো লেখা পেতে চিকিৎসা এ ক্লিক করুন।
ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা ও সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আল্লাহ হাফেজ।


 

Comments