আপনার ব্রেনকে বৃদ্ধি করুণ আর আগের চেয়ে অনেক দ্রুত মুখস্থ করুন ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগর এর মত। একটা পড়া একবার পড়ুন আর পড়ার দরকার নেই।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের সবার মধ্যে বিরাজমান। তিনি আমাদের সবাইকে সমান ভাবে দেখেন। কিন্তু আমাদের কেউ ১০ লাইনের একটি পড়া ১০ মিনিট পড়েই মুখস্থ রাখতে পাড়ে, আর কারো ঔ একই পড়া মুখস্থ করতে সময লাগে ৩০ মিনিট। তাহলে কি আমাদের মধ্যে ব্রেনের কোন পার্থক্য আছে? কারো ব্রেন বেশি আর কারো ব্রেণ কম। কিন্তু আল্লাহ তায়ালাতো আমাদের সবাইকে সমান ব্রেন দান করেছেন। কারণ তিনি সবাইকে সমানভাবে দেখেন। তাহলে কি কারণে এরকম হয়? এই প্রশ্নের উত্তর হল মনোযোগ। যার মনোযোগ যত বেশি তার ব্রেন তত বেশি। এর অর্থ হল মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারলে আমাদের ব্রেন বৃদ্ধি পাবে। যে যত বেশি মনোযোগ বৃদ্ধি করবে তার ব্রেন তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু প্রশ্ন হল মনোযোগ কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়। হ্যা বন্ধুরা এখন আমি তোমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি করার নিয়ম শেখাব।
মনোযোগ:
ধরুন আপনার কাছে ১০০ ইউনিট মনোযোগ আছে। যখন মন কিছু ভাবে বা মন কোন কিছুর প্রতি আকৃষ্ট হয় তখন মনোযোগ বা মেন্টাল এনার্জির একটা অংশ ব্যয় হয়। আর যখন আপনার চিন্তা বিঘ্নিত হয় বা মনে অন্য কোন চিন্তা আসে তখন মনোযোগ  বা মেন্টাল এনার্জির অপচয় হয়। এবার ধরা যাক, আপনি কোন লেখার কাজ নিয়ে বসেছেন। কাজ করতে গিয়ে মনে হলো বসাটা ঠিক জুতসই হয়নি। একটু নড়েচড়ে বসলেন। আর এটা করতে গিয়ে আপনার মনোযোগের একটা অংশের অপচয় হলো। আপনি আপনার কোন দৈহিক টেনশন সম্পর্কে সজাগ না থাকলেও পেশীর যে কোন উত্তেজনা আপনার মেন্টাল এনার্জির অপচয় ঘটাবে। ধরুন এ্ই নড়াচড়ায় ১৫ ইউনিট মনোযোগের অপচয় ঘটল। আবার লিখতে বা কাজ করতে শুরু করলেন, দেখা গেল সারাদিন যেখানে নাক, কান বা শরীরের কোথাও চুলকায়নি, সেখানে চুলকানি অনুভব করলেন, অবচেতন ভাবেই চুলকানির কাজে লেগে গেলেন। এভাবে ১৫ ইউনিট মেন্টাল এনার্জির অপচয় হলো। আবার লিখতে বা কাজ করতে বসে একটু পরেই একঘেয়েমি লাগতে শুরু করল। আপনার মনের একটি অংশ লিখতে বা কাজ করতে চায়, আর একটা অংশ তখন বাইরে বেড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠল। আপনার আরও ১৫ ইউনিট মেন্টাল এনার্জির অপচয় হলো। একটু পরেই হয়তো আপনি ক্লান্ত অনুভব করলেন, একটু ঝিমুনি এসে গেল। আরও ১৫ ইউনিট মনোযোগ বা মেন্টাল এনার্জির অপচয় হলো। একটা লেখা বা কাজ নিয়ে বসে ১০০ ইউনিট মনোযোগ থেকে যদি এতগুলো ইউনিট মনোযোগের অপচয় ঘটে তা হলে অবশিষ্ট আর কি থাকে? আমাদের জীবনে ১০০ ইউনিট মনোযোগের বেশিরভাগই আমরা অপচয় করে থাকি।
২ মিনিট মনোযোগ:
আপতদৃষ্টিতে খুব সহজ এ অনুশীলন, মাত্র দু'মিনিট ঘড়ির কাটার প্রতি অখন্ড মনোযোগ নিয়ে তাকিয়ে থাকা। ঘড়ির কাটা ছাড়া অন্য কোন কিছু না ভাবা। বিশিষ্ট সাধক মৌনী সাধু এই অনুশীলনের উদ্ভাবক। অনুশীলনীর পদ্ধতিটাও খুব সহজ।
১. বড় সেকেন্ডের কাটা রয়েছে এমন একটি দেয়ার বা টেবিল ঘড়ির সামনে বসুন। টেবিল বা দেয়াল ঘড়ির অভাবে বড় সেকেন্ডের কাটাযুক্ত হাতঘড়ি দিয়েও কাজ চলতে পারে।
২. শরীর শিথিল হতে কয়েক মুহুর্ত সময় নিন। সব কিছু থেকে মনোযোগ ফিরিয়ে এনে একাগ্র হোন। মানসিক প্রস্তুতি শেষ করার পর সেকেন্ডের কাটার গতির ওপর আপনার মনোযোগ নিবদ্ধ করুন।
৩. মাত্র দু'মিনিটের জন্যে আপনার সচেতনতাকে সীমিত রাখুন সেকেন্ডের কাটার গতির উপর। এমনভাবে মনোযোগ দিন যে, সেকেন্ডের কাটা ছাড়া এই মহা বিশ্বে আর কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই।
৪. অন্য কোন চিন্তা ঢুকে যদি মনোযোগের সুতো ছিড়ে ফেলে তা হলে থামুন। আলতোভাবে মনোযোগ সেকেন্ডের কাটায় ফিরিয়ে আনুন।
৫. পাক্কা দু' মিনিট আপনার মনোযোগ বাজায় রাখতে চেষ্টা করুন।
কেমন লাগল আপনার? মনোযোগ দেয়া কি প্রথমে সহজ হয়েছিল? পরে তা কষ্টকর হয়ে দাড়ায়? আপনি কি তখন অন্য কোন চিন্তা করছিলেন? অথবা কি ভাবছিলেন কত সুন্দরভাবে অনুশীলন করছেন? বা একদম অনুশীলন হচ্ছে না? দু'মিনিটে আপনার মনোযোগের অবস্থা যা-ই হোক না কেন, আপনি লক্ষ্য করেছেন কিছুক্ষণ পর আপনার মন অন্য কোন কিছু নিয়ে ভাবতে ছেয়েছে। নিস্ক্রিয় মনোযোগ সব সময়ই স্বতস্ফুর্তভাবে ঘটে, কিন্তু সক্রিয় মনোযোগ সব সময় মানসিক শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। সত্যি বলতে কি মনোযোগ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। কিন্তু আপনি যদি প্রতিনিয়ত অনুশীলন করেন তাহলে আপনার মন এক জায়গা থাকতে বাধ্য হবে। এভাবে প্রথমে ২ মিনিট তারপর ৩ মিনিট...৫মিনিট অনুশীলন করেন। ইনশাআল্লাহ আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।

সূত্রঃ  শহীদ আল বোখারী মহাজাতকের কোয়ান্টাম মেথড বইয়ের ১৩৮,১৩৯,১৪০ পৃস্টায় উপরের কথাগুলো পাবেন। বইয়ের লিঙ্ক =>> লিংক ধন্যবাদ
আজ এই পর্যন্ত। এটা আমার প্রথম টিউন। ভূল হলে ক্ষামা করবেন।

Comments