ওয়েব সাইট এর ডোমেইন নেম ও ওয়েব হোস্টিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

আমাদের অনেকের নিজের কিংবা প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইট তৈরি করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু একটি ওয়েব সাইট বানানোর জন্য প্রধান দুটি জিনিসের দরকার হয়। একটি হল ডোমেইন নেম আর একটি হল হোস্টিং।
ডোমেইন ও ওয়েব হোস্টিংয়ের বিষয়টি অনেকের কাছে কঠিন মনে হয়। আমি সহজ ভাবে আপনাদের বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করছি।
domain-name

আগের উদাহরনে ফিরে যায়। আপনার অফিসে যদি কেউ আসতে চায়, তবে তাকে এর ঠিকানা জানতে হবে। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে এই ঠিকানাটা হচ্ছে তার নাম যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম। এই ডোমেইন নেমই আপনার ওয়েবসাইটকে অনন্যভাবে আইডেন্টিফাই করবে। বিশ্বের সবাই ওয়েবসাইটটিকে চিনবে এবং একসেস করবে এ নাম ব্যবহার করে।
কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক সফটওর্য়ার কিন্তু কোনো ডোমেইন নেমকে সরাসরি বুঝতে পারে না। সে বোঝে নেটওর্য়াক অ্যাড্রেস বা আইপি অ্যড্রেস। তাই প্রত্যেক ডোমেইন নেমের সাথে একটা আইপি অ্যাড্রেস এসাইন করা হয়। ডোমেইন নেম ব্যবহার না করে এ আইপি অ্যড্রেস দিয়েও সরাসরি ওযেবসাইটটিতে যাওয়া যায়। আইপি অ্যাড্রেস মনে রাখা বেশ কঠিন, সাধারণত ১২ অংকের সংখ্যা হয়। তাই বাস্তবে সবাই ডোমেইন নেম ব্যবহার করে, কিন্তু আপনার কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস জানা দরকার যে কোন ধরনের কমিউনিকেশনের জন্য । সর্বপ্রথম নেটওর্য়াক ARPANET -এর সময় host.txt নামে একটা ফাইলে সব কম্পিউটারের নাম আর তার আইপি অ্যাড্রেস লিখে রাখা হত। যখন নেটওয়ার্কে কোটি কোটি কম্পিউটার থাকে, তখন এভাবে আইপি অ্যাড্রেস লিখে রাখা সহজ কথা নয়। কারন প্রতিনিয়ত আইপি অ্যড্রেস সংযুক্ত হয় এবং পরিবর্তিত হয়।
এ সমস্যার সমাধানে ধারাবাহিক,ডায়নামিক এবং ডিস্ট্রিবিউটেড ডাটাবেজ সম্বলিত একটা সিস্টেম দাঁড় করানো হয়েছে, যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম সিস্টেম। ডোমেইন নেমকে কতগুলো লেভেলে ভাগ করা হয়ে থাকে। প্রায় ২৫০ টি টপ লেভেল ডোমেইন আছে, বাকি সবই থাকে এদের অধীনে একটা ট্রি স্ট্যাকচারে। ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে প্রায় ১৯ টি টপ লেভেল ডোমেইন আছে । এর মধ্যে সাধারণ সব ওয়েবসাইটের জন্য .com, ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটের জন্য .biz, খবর ও অনান্য ইনফরমেশন সাইটের জন্য .info, অর্গানাইজেশনের জন্য .org, অনলাইন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানেনর জন্য .net। আবার প্রায় প্রত্যেক দেশের রয়েছে নিজস্ব টপ লেভেল ডোমেইন, যেমনঃ ব্রিটেনের .uk, জাপানের .jp,যুক্তরাষ্টের .us, ভারতের .in বাংলাদেশের .bd ইত্যাদি।
domain-name-specification


বিশ্বে যত ডোমেইন নেম আছে, সেগুলো মিলে একটি ট্রি-এর মত গঠন লাভ করে। এই ট্রি-কে কতগুলো জোনে ভাগ করা হয়। একটি জোনের সব ডোমেইন নেমের দায়দায়িত্ব যে কম্পিউটার নেয় তাকে বলা হয় সে জোনের Authoritative DNS name server ।ডিএনএস নেমসার্ভারের দায়িত্ব হল তার জোনে অবস্থিত সব কম্পিউটারের ডোমেইন নেমের সাথে আইপি অ্যাড্রেস ম্যাচ করানো। না পারলে টপ লেভেল ডোমেইনকে জানানো এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা করা। পুরো বিষয়টিকে অনেকটা পোষ্ট অফিসের মত করে ব্যাখ্যা করা যায়। ধরা যাক, আপনি একটি চিঠি লিখলেন। প্রাপকের ঠিকানা যদি আপনার স্থানীয় পোষ্ট অফিসের এলাকায় মধ্যে হয়, তবে তারাই তা পৌঁছে দেবে। আর যদি না হয়, তবে এরা প্রথমে দেখবে প্রাপকের ঠিকানা কোন দেশে। তারপর সে দেশের মূল পোষ্ট অফিসে পাঠিয়ে দেবে চিঠি। সেখান থেকে বিভাগ বা জেলা শহরের পোষ্ট অফিসে, এরপর উপজেলায়, তারপর স্থানীয় পোষ্ট অফিসে চিঠিটি পৌঁছে দেবে। তাই বাংলাদেশের দিনাজপুরের কালাম আর ভারতের দিনাজপুরের কালাম দু’জনের কাছেই যার যার চিঠি সঠিক ভাবে পৌঁছানো সম্ভব এভাবে। ডোমেইন নেমের ক্ষেত্রে এ ঠিকানা খুঁজে বের করাকেই বলা হয় অ্যাড্রেস resolving, আর সেটা কাজ করে ঠিক পোষ্ট অফিসের মতোই। এখন যদি .com রিসলভার যদি যেমন ধরুন hitalks.com -এর আইপি অ্যাড্রেস জানতে চায়, তবে প্রথমে সে তার জোনের ডিএনএস নেমসার্ভার com -এর কাছে জানতে চাইবে। যেহেতু hitalks.com একই জোনে আছে, তার নেমসার্ভারকে তা জানিয়ে দেবে। কিন্তু যদি সে techinews24.com -এর আইপি অ্যাড্রেস জানতে চায়, তবে .com -এর নেমসার্ভার তা জানাতে পারবে না। তখন এই ডিএনএস query পাঠিয়ে দেয়া হবে টপ লেভেল in জোনের নেমসার্ভারে। সেখান থেকে থেকে com নেমসার্ভারে। সে যেহেতু hitalks.com -এর আইপি অ্যাড্রেস জানে, তাই সে প্রতিউত্তরে .inকে জানিয়ে দিবে।
ডোমেইন রেজিস্ট্রেশনকে তুলনা করা যায় আপনার অফিস বিল্ডিংয়ের জন্য জায়গা লিজ নেবার সাথে। এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের জন্য নাম (ডোমেইন নেম) বরাদ্দ করলেন। সাধারণত এক বছরের জন্য এ বরাদ্দ হয়ে থাকে, সময় শেষ হবার আগেই তা রিনিউ করতে হয়, নয়তো অন্য কেউ সে একই নামের জন্য আবার আবেদন করতে পারে।ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন ফর এসাইনড নেমস এ্যান্ড নাম্বারস (ICANN) এসব ডোমেইন নেম ম্যানেজ করে থাকে। ICANN -ই নিশ্চয়তা দেয় যে, প্রতিটা ডোমেইন নেম ইউনিক এবং এর সাথে একটা ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস বরাদ্দ করা হয়েছে।আপনি ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করবেন যেসব কোম্পানির মাধ্যমে তাদের বলা হয় রেজিস্ট্রার। বিভিন্ন কোম্পানির ফি ও সেবা বিভিন্ন হতে পারে, তবে একই ফি সাধারণত খুব কমই হয়ে থাকে । আপনি যে নামে ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান, রেজিস্ট্রার কোম্পানি প্রথমে অনলাইন ডাটাবেজে সার্চ করবে যে এ নাম অন্য কাউকে বরাদ্দ করা হয়েছে কিনা। কাউকে বরাদ্দ না করে থাকলে কেবল আপনি এ নাম পেতে পারেন।
ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনার পুরো নাম, অ্যাড্রেস, টেলিফোন নম্বর ও ইমেইল অ্যাড্রেস দিতে হয়, যা WHOIS (who is) ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে। লক্ষ রাখবেন, এসব তথ্য সবার জন্য উন্মুক্ত এবং আপনার প্রাইভেসি নষ্ট করতে পারে। যে কেউ চাইলে এ তথ্য দেখতে পারে। বর্তমানে অবশ্য ইমেজ কী ভ্যালুর মাধ্যমে স্পাইওয়্যার ও সফটবট (software robot) ঠেকানো হচ্চে, তবুও তা প্রাইভেসির নিশ্চয়তা দেয় না। অনেক রেজিস্ট্রারই এ সমস্যা কাটানোর জন্য সামান্য ফি-র বিনিময়ে নিজেরাই প্রক্সি হিসেবে কাজ করে। সে রকম কোন সার্ভিস নিলে সতর্কতার সাথে তাদের শর্তাবলী পড়ে নিন ভালমতো।আরো দুটি বিষয় নিশ্চিত হয়ে নিন, ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনার রেজিস্ট্রেশনের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে ? অনেক রেজিস্ট্রার নিজেই তার অধীনস্থ ডোমেইন নেমকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে, যা বাঞ্জণীয় নয় । আর এটাও জেনে নিন, পরে আপনি যদি ওয়েবসাইটটিকে অন্য কোনো রেজিস্ট্রারের অধীন নিতে চাইলে সম্ভব কিনা ?এ ধরনের সার্ভিসের শর্ত ও ফি সম্পর্কেও ভালমত জেনে নিন।
কারন ভাল সেবার জন্য অন্য কোনো রেজিস্ট্রারের কাছে যেতে হতে পারে।ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যে আপনার ওয়েবপেজ সবার জন্য উমুক্ত হবে। আপনার রেজিস্ট্রার সাধারণত একটি ডামি পেজ বসিযে দিবে। আপনার ওয়েবপেজকে এবার হোস্টিং করতে হবে। অনেক রেজিস্ট্রার এ হোস্টিংয়ের সেবাও দিয়ে থাকে, তবে আপনি অন্য কোনো কম্পানির মাধ্যমেও তা করতে পারেন। ICANN তাদের নির্ধারিত রেজিস্ট্রারদের মাধ্যমেই ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশনের পরামর্শ দিয়ে থাকে। এরা নূন্যতম মানের নিশ্চয়তা দেয়। এদের তালিকা ICANN এরhttp://www.icann.org/ ওয়েবসাইটে সংরক্ষিত আছে। ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যাবলী সংরক্ষণ করে থাকে ICANN। বিশ্বের সব ডোমেইন রেজিস্ট্রার ও রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত তথ্য পাবেন তাদের http://whois.webhosting.info/ ওয়েবসাইটটিতে। আপনি techitalks.com এর তথ্য জানতে হলে সাইটিতে গিয়ে বক্সে techitalks.com টাইপ করে এটার প্রেশ করুন। তাহলেই techitalks.comএর ইনফরমেশন দেখতে পারবেন।
web-hosting

কোন তথ্যকে অন্যের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট। আজকের কম্পিউটার ব্যবহারকারী মাত্রই ওয়েবসাইট সম্পর্কে অবগত আছেন। সহজ ভাষায় বলা যায়,ওয়েবসাইট হল আপনার তথ্যকে অন্যের সামনে উপস্থাপন করার রাস্তা- সেটা টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়া (যেমনঃ ছবি, অডিও বা ভিডিও) যে কোন ধরনের হতে পারে। ওয়েবসাইটে সেগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা ওয়েব ডেভেলপারের কাজ। আর আপনার ওয়েবসাইটটি অন্যদের দেখার জন্য উপযোগী করাই ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত।আপনার ওয়েবসাইটটিকে যদি তুলনা করা হয় আপনার প্রতিষ্ঠানের অফিস বিল্ডিং হিসাবে, তবে তার তথ্য বা কনটেন্ট হবে এর আসবাবপত্র। আর ওয়েবসাইট ডেভেলপ করাকে তুলনা করা যাবে বাড়িটি তৈরি করার সাথে। সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইট হোস্টিংকে তুলনা করা যায় আপনার অফিস বিল্ডিংয়ের জন্য জায়গা কেনা এবং সে জায়গায় বাড়িটি তৈরি করার সাথে। তবেই ভিজিটররা ওয়েবসাইটি ব্যবহার করার সুযোগ পাবে।

Bandwidth-internet
ওয়েবসাইট হোস্টিং করার সময় যে বিষয়টি ভালোভাবে লক্ষ্য করতে হবে, তা হলো আপনাকে মাসে কি পরিমান ব্যান্ডউইথ দেয়া হবে তা। এখানে ব্যান্ডউইথ বলতে বুঝানো হয় যে ইউজাররা সেই ওয়েবসাইট থেকে মাসে কি পরিমান ডাটা ডাউনলোড করতে পারবে তার পরিমান। ব্যান্ডউইথ হিসাব আপনি খুব সহজে করতে পারবেন। ধরা যাক, আপনার ওয়েবসাইটিতে প্রতিটি ওয়েবপেজের টেক্সট সাইজ ৩ KB(কিলোবাইট) এবং গ্রাফিক্স সাইজ ১০ KB(কিলোবাইট), প্রতিদিন গড়ে ১০০ জন ভিজিটর গড়ে ৩টি করে পেজ ভিজিট করে । তবে মোট ব্যান্ডউইথ দরকার = (৩ KB+ ১০ KB)*১০০*৩*৩০ = ১,১৭,০০০ KB(কিলোবাইট) = ১১৪.২৬ MB (মেগাবাইট), আপনাকে অবশ্যই আনুপাতিক হিসাবের চেয়ে বেশি ব্যান্ডউইট কিনতে হবে শুরুতেই । আপনি জেনে নিবেন ভবিষতে আরো বেশী ব্যান্ডউইথ কিনতে চাইলে কত মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আজকাল অবশ্য অনেক ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের সার্ভারের ম্যাক্সিমাম ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটি এবং লোড সম্পর্কে জেনে নিন।
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইলগুলো অর্থ্যাৎ টেক্সট, গ্রাফিক্স, ডাটাবেজ ইত্যাদি রাথার জন্য সার্ভারের স্পেস কিনতে হবে। আপনার ওয়েবসাইট তৈরির পর প্রোপাটিজ জেনে নিন নূন্যতম কতটুকু জায়গা দরকার হবে এর। তবে মাত্র ততটুকু জায়াগা কেনা উচিত হবে না। ওয়েবপেজনি স্টাটিক হয়, তবুও আপনি কিছু দিন পরপর নতুন কিছু যুক্ত করতে বা পরিবর্তন করতে চাইতে পারেন। আর যদি এতে ইউজারদের ইনপুট দেয়ার ব্যবস্থা থাকে বা নিয়মিত আপডেট করতে হয়, তাহলেতো কথাই নেই। ডাটাবেজ ব্রবহার করে তাকলেও আশা করা যায় দিনে দিনে তার সাইজ বাড়বে। তাই আপনার যতটুকু দরকার তার কমপক্ষে দ্বিগুণ জায়গা কিনুন। আর যদি ডাটাবেজ নির্ভর ওয়েবসাইট হয়ে থাবে, তবে হিসেব করুন আগামী কয়েক বছরে ইনপুট কত হবে। তার ওপর ভিত্তি করে আরো বেশ কিছুটা বেশি হার্ডডিস্ক স্পেস কিনুন। আর যদি ভবিষ্যতে আরো বেমি হার্ডডিস্ক স্পেস কিনতে হয় তবে কত টাকা দেতে হবে সেটাও আপনার ওয়েব হোস্টিং কোস্পানির কাছ থেকে জেনে নিন ভালভাবে।
hosting_details

যে ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করছেন, সেগুলো আপনাকে এর জন্য দরকারী ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দেবে। তাহলেই আপনি এফটিপি(ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকল) ব্যবহার করে এ কাজটি করতে পারবেন। এ কাজটি সহজ করার জন্য রয়েছে আরো বেশ কিছু সফটওয়ার, যেগুলো সাধারণভাবে ওয়েব বিল্ডার নামে পরিচিত। অনেক হোস্টিং কোম্পানি ও ডোমেইন নেম প্রোভাইডার এটি ফ্রি দিয়ে থাকে বা আপনি অনলাইনেও ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট পাবলিশ করার আগে তার প্রিভিউ দেখেও নিতে পারবেন।
বেশিরভাগ ওয়েবসাইটেই কোনো না কোনো ডাটাবেজ সার্ভার ব্যবহার করে হয়। এর ফলে তথ্য জমা রাখা, বের করে আনা, সার্চ করা সহজতর হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে ডাটাবেজই মুখ্য, ওয়েবসাইটি শুধু ডাটা প্রর্দশন করে। আপনি যে ডাটাবেজ সিস্টেম ব্যবহার করবেন আপনার ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিকে অবশ্যই সেটা সাপোর্ট করতে হবে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS)- এর মধ্যে রয়েছে মাইএসকিউএল, ওরাকল, মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার ২০০৫ ইত্যাদি। ওয়েবসাইট ডিজাইন ও হোস্টিং করার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ডাটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসাবে কোনটি ব্যবহার করবেন। কারন এর সাথে স্ক্রিপিং ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যবহার ও ওয়েব সার্ভারের অপারেটিং সিস্টেমও জড়িত।
shared-vs-dedicated-hosting-difference

শেয়ারড নাকি ডেডিকেট সার্ভারঃ
মূলত দুই ধরনের হোস্টিং সার্ভিস আছে- শেয়ারড এবং ডেডিকেটেড । দাম ও পারফরমেন্সের বিশাল পার্থক্য জড়িত এখানে। শেয়ারড হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে একই ওয়েব সার্ভারে একাধিক ওয়েবসাইটকে হোস্ট করা হয়। ফলে খরচ অনেক কম হয়। কিন্তু এর ফলে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ও ব্যান্ডউইডথ সবার মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। কারন, একটি সার্ভার সব ওয়েবসাইটের সব ভিজিটরকে হ্যান্ডেল করে। যদি আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর সংখ্যা এক হাজারের নিচে হয়, তাহলে এ ধরনের সার্ভিস বেছে নিতে পারেন । আর অন্য ধরনের সার্ভিস হলো ডেডিকেটেড হোস্টিং। এক্ষেত্রে একটি ওয়েব সার্ভারে শুধু একটি ওয়েবসাইই হোস্টিং করা হবে। ফলে স্টোরেজ, সিপিইই আর নেটওয়ার্কের পুরো ক্ষমতা ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এটি বেশ ব্যয়বহুল। প্রতিমাসে ন্যূনতম ৮০ থেকে ১০০ ডলার খরচ হয়ে থাকে।
ওয়েব হোস্টিং করার সময় কন্ট্রোল প্যানেল সম্পর্কে অবশ্যই ভালভাবে জেনে নিবেন। এর মাধ্যমে আপনি ওয়েব হোস্টিং অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন সেটিং সহজে করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ওয়েব হোস্টিং অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন সেটিং সহজে করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন পরিসংখ্যান জানতে পারবেন, ডেটাবেইজ ম্রানেজ করতে পারবেন। সাব ডোমেইন, ইমেইল অ্যাকাউন্ট কনফিগার ও ম্যানেজ করতে পারবেন। সাধারণত সব ওয়েব হোস্টি প্রোভাইডারই তাদের ইউজারদের কন্ট্রোল প্যানেলের সুবিধা দিয়ে থাকে। অনেক কন্ট্রোল প্যানেল সফটওয়ার আছে, তাদের মধ্যে জনপ্রিয় তিনটি হল CPanel, Ensim এবং Plesk। CPanel-ই সবজেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশির ভাগ ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার এটি ব্যবহার করে থাকে।
আপনি আপনার ব্যক্তিগত বা কোম্পানির ওয়েবসাইটটি হয়তো কোনো ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন ফার্ম বা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির মাধ্যমে করালেন তখন এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ইনফরমেশন জেনে নেয়া জরুরি। কারন, কোনো সময যদি এ ফার্মটি বন্দ হয়ে যায় বা ব্যবসায় পরিবর্তন করে, তখন আপনার ওয়েবসাইটির ঔপর আপনি নিয়ন্ত্রন হারাবেন, এক বছর পর আইপি এ্যাড্রেস রিনিউ করা না হলে তা হারিয়ে যাবে। সেই সাথে হারিয়ে যাবে আপনার এই ওয়েবসাইটটি। আবার যদি আপনার ওয়েব হোস্টিং কোম্পানির সেবায় সন্তুষ্ট না হয়ে অন্য কারো সার্ভিস নিতে চান, তাহলেও আপনাকে এ তথ্যগুলো জানতে হবে। আপনার ডোমেইন নেমটির দ্বায়দ্বায়িত্ব একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের ওপর ন্যাস্ত করে রেজিস্টার। এই ডোমেইন নেম সংক্রান্ত সব বিষয়ে সবচেযে ক্ষমতাবান এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। ডোমেইন নেমের ইউনিক নেম নিশ্চিত করা, তার ফিজিক্যাল এ্যাড্রেস, whois ডেটাবেইজে তার এ্যাড্রেস, ইমেইল,টেলিফোন নম্বর পরিবর্তন এ ধরনের সব কাজের ক্ষমতা থাকে এ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরের উপর । কাজেই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এবং ওয়েব হোস্টিং করার সময় এর কন্টাক এ্যাড্রেস অবশ্যই জেনে নিবেন। আপনার ডোমেইন নেম যে সার্ভারে ব্যবস্থাপনা করা হয়, তাকে ম্যানেজ করে এই অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। নেমসার্ভারের সার্বক্ষণিক নিরপত্তা, পরিবর্তন, কনফিগারেশন করা এর দায়িত্ব । আপনার নেমসার্ভার ক্র্যাশ করলে আপনার ওয়েবসাইট কেউ একসেস করতে পারবে না। তাই এ সংক্রান্ত যে কোন সমস্যায় যোগাযোগ করার জন্য এদের এ্যাড্রেস জেনে রাখতে হবে।
শেষ কথা:
প্রতারণার হাত থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার জন্য যে জিনিসগুলো জেনে রাখবেন সেগুলো হলো- আপনার রেজিস্ট্রারের ইনফরমেশন, ওয়েব সার্ভারের কন্ট্রোল প্যানেলে আপনার ওয়েব সাইট একসেস করার জন্য আইডি এবং পাসওয়ার্ড , এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ টেকনিকাল ও বিলিং কন্ট্রাক্ট।
আরো জান্তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

Comments