মৃত্যুর সময় শয়তানের প্রতারণায় পড়ার করণ
















আলোচিত আয়াত ও হাদিসের বর্ণনাসমূহ দ্বারা একথা প্রমান হয় যে, জান ও ইমানের দুশমন অভিশপ্ত সয়তান মানুষের সংকটাপন্ন
 অবস্থায়ও তারা ঈমানের উপর হামলা করার চেষ্টা করে। আর শয়তানের প্রতারনা থেকে আল্লাহ তাআলার রহমত, ফেরেশতাদের
সহযোগিতা- সহানুভূতি ঐ সকল লোকের জন্যি নির্ধারিত, যারা আল্লাহ তাআলাদে রব (প্রতিপালক) বলে স্বীকার করে এবং তার উপর
 আবিচল থাকে। এতে বুঝা গেল, যারা আল্লাহ তাআলার উপর একেবারে ইমানি আনেনি এবং তাকে রব বলে স্বীকারই করেনি, তারা
 তো স্বাভাবিক। আভাবে যে সকল লোক ঈমান এনেছে। কিন্তু ঈমানের উপর অবিচল থাকেনি, তারাও মৃত্যু কালিন আল্লাহর রহমত
ও ফেরেশতাদের সাহায্য থেকে বঞ্চিত হবে।
 উল্লেখ্য, ঈমানের উপর অটল না থাকার আকাদিক স্তর আছে। (১) আল্লাহ না করুন একেবারে ঈমানই হারিয়ে ফেলা।
 (২) নাফরমানী ও গোনাহতে লিপ্ত হয়া এবং বার বার গোনাহ করা, যাতে প্রতীয়মান হয় যে, তার অন্তরে আল্লাহ তাআলার ভয়
একেবারেই নেই- আর আল্লাহর ভয় হৃদয়ে থাকাই ঈমান ও ইন্তেকামাতের প্রকৃত প্রাণ। এ প্রকারের লোকেরাও মৃত্যুর সময় অধিকাংশ
 সময় শয়তানের প্রতারণার শিকার হয়ে যায়। ইমাম সারানী তাঁর গ্রন্থ মোখতাসার তাযকেরায়ে কুরতুবীতে এ মর্মের অসংখ্য ঘটনা
 লেখেছেন- যারা মধ্য হতে কতিপয় ঘটনা নিম্মে  দেওয়া গেল।  এক সওদাগরের ঘটনা- সে সব সময় সওদাগরী কাজ- কারবারে
এমনভাবে লিপ্ত থাকত যে, কখনও কখনও নামায এবাদতের কথা  মনেও থাকত না । মৃত্যুর সময় তাকে বলা হল, 'লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ' বল, কিন্তু তাঁর মুখে ঐ সময় ব্যবসায়িক হিসাব নিকাশ ছিল এবং আঙ্গুলে সে ঐ হিসাব গণনা করছিল। আভাবে তাঁর আর
কালেমা পড়ার তওফীক হল না। আরুপ আর এক ব্যক্তির ঘটনা আছে- সে  দুনিয়ার কাজ- কারবারে বিভোর হয়ে দ্বীন ও আবাদত
থেকে গাফেল ছিল, মৃত্যুর সময় তাকে লোকেরা যখন কালেমার তালকিন দিচ্ছিল, তখন সে বলল- তোমারা আমার গাভীকে ঘাস
খাওয়াচ্ছ কি?
আর একটি ঘটনাঃ এক ব্যবসায়ীকে মৃত্যুর সময় লোকেরা কালেমায়ে তাইয়্যেবা পরাতে চাইল, কিন্তু সে কালেমায়ে তাইয়্যেবা না
পড়ে হিসাব- নিকাশেই ব্যস্ত ছিল; আর ঐ আবস্থায়ই তাঁর আত্মা পরপারে চলে গেল।
আর এক ব্যবসায়ীর ঘটনা- সে লোকদের থেকে মাল রাখার সময় সঠিক ওজনে রাখত, কিন্তু নিজে যখন বিক্রি করত তখন পাল্লা পরিষ্কার না থাকার কারনে ওজনে কম- বেশী হয়ে যেত। তাঁর মৃত্যুর সময় লোকেরা তাকে বলল,
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়। সে বলল, আমি তো হুশে আছি এবং সব কথা বলতে পারছি। কিন্তু যখন কালেমায়ে তাইয়্যেবা পরতে চাই তখন
আমার মুখে পাল্লার কাঁটা আটকে যায়, পড়তে পারি না। কেননা, আমি ওজন করার সময় পাল্লা পরিষ্কার না করে ওজন করে ফেলতাম।
এখন তোমরা আল্লাহর কাছে দোআ কর তিনি যেন আমাকে এ বিপদ থেকে মুক্তি দেন।
উল্লেখ্য, হয়ত আলোচিত ব্যক্তি পাল্লা অপরিষ্কার আছে জেনেও পরিষ্কার করত না এবং এর উপর খুশী থাকত। অন্যথায় সতর্ক থাকার পরও যদি অজানা সত্ত্বে পাল্লা অপরিষ্কারের
কারনে কিছু কম- বেশী হয়ে যায় তবে এতে কোন ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।

 সূত্রঃ  মৃত্যুর আগে ও হাশরের পরে
 আর আগের ও পরের পৃষ্ঠা গুলো না পড়ে থাকলে এখানে ক্লিক করে পড়ুন

Comments